খোন্দকার আশরাফ হোসেন (জানুয়ারি ৪, ১৯৫০ - জুন ১৬, ২০১৩) ছিলেন বাংলাদেশী উত্তরাধুনিক[১] কবি, গদ্যকার, সাহিত্য সমালোচক, সম্পাদক, অনুবাদক, এবং অধ্যাপক। তার প্রকাশিত গ্রন্ধের সংখ্যা প্রায় ত্রিশ।
জন্ম, শৈশব ও শিক্ষা
খোন্দকার আশরাফ হোসেনের জন্ম ১৯৫০ সালের ৪ জানুয়ারি জামালপুরের জয়নগরে। ১৯৬৫ সালে তিনি ভাটারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে মাধ্যমিক শেষ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে। হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে স্নাতক এবং পরবর্তী বছর ১৯৭১ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন ইংরেজি বিষয়ে। পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যের লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাতত্ত্ব ও ধ্বনিতত্ত্ব বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা এবং ১৯৮১ সালে ভাষাতত্ত্ব বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মজীবন
হোসেন ১৯৭৩ সাল থেকে ২০১৩ সালে মৃত্যুর পূর্বাবধি পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে চার দশককাল অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন মেধাবী গবেষক ও সাহিত্য সমলোচক। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে অকালীন মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়-এর উপাচার্য হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন।[৫][৬] তিনি ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।[৭] তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও ফ্যাকাল্টি নির্বাচন কমিটির সদস্য ছিলেন।
সাহিত্যধারা
আশির দশকের মাঝামাঝিভাগে - ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে - তিন রমনীর ক্বাসিদা শিরোনামীয় কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে বাংলা আধুনিক কবিতার জগতে আত্মপ্রকাশ করেন। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত পার্থ তোমার তীব্র তীর, ১৯৮৯-এ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত জীবনের সমান চুমুক, ১৯৯১-এ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত সুন্দরী ও ঘৃণার ঘুঙুর, ১৯৯৫-এ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত নির্বাচিত কবিতা, ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত যমুনাপর্ব এবং ২০০১ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত জন্মবাউল। তার প্রকাশিত প্রবন্ধগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ১৯৯৫-এ প্রকাশিত বাংলাদেশের কবিতা অন্তরঙ্গ অবলোকন, ২০১০-এ প্রকাশিত কবিতার অন্তর্যামী: আধুনিক উত্তর আধুনিক ও অন্যান্য প্রসঙ্গ এবং ২০১২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত "রবীন্দ্রনাথ ইয়েটস গীতাঞ্জলি"। ২০১৩-তে প্রকাশিত হয় তাঁর সর্বশেষ প্রবন্ধগ্রন্থ "বাঙালির দ্বিধা ও রবীন্দ্রনাথ এবং বিবিধ তত্ততালাশ"। [৮] তিনি অনুবাদ করেছেন পাউল সেলানের কবিতা।